ভারতের গুজরাটে ঝুলন্ত সেতু ধসের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৪০। ইতিহাসের অন্যতম ট্রাজেডির শিকার গুজরাটবাসী। ১৮০০ দশকের শেষদিকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার সময় নির্মিত সেতুটি ঐতিহাসিক স্থাপনার অংশ হিসেবে দাঁড়িয়ে ছিল প্রায় দেড়শ বছর। তবে মাঝে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল সেতুটি।
গুজরাটের স্থানীয় নববর্ষ উপলক্ষে গত ২৬ অক্টোবর মেরামত করে পুনরায় খুলে দেওয়া হয় সেতুটি। এর পরপরই ঘটে ভয়াবহ ঘটনাটি। এ ঘটনায় দায়ী সন্দেহে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যাদের মধ্যে সবাই সেতু সংশ্লিষ্ট।
গ্রেপ্তারের বিষয়ে ইন্সপেক্টর-জেনারেল অশোক যাদব বলেন, ‘পুলিশ একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সেতুর অপারেটর, ওরেভা গ্রুপের ম্যানেজার এবং এর স্টাফদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আমরা দোষীদের পালিয়ে যেতে দেব না, আমরা কাউকে রেহাই দেব না। ’
গুজরাট কর্তৃপক্ষ ওরেভার বিরুদ্ধে সন্দেহজনক অপরাধমূলক হত্যা, অপরাধমূলক হত্যার চেষ্টা এবং অন্যান্য নিয়ম লঙ্ঘনের একটি মামলা দায়ের করেন।
চলতি বছরের মার্চ মাসে, স্থানীয় মোরবি শহর সরকার ওরেভাকে সেতুটি রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার জন্য একটি ১৫-বছরের একটি চুক্তি প্রদান করে। এই কোম্পানিটি মূলত ঘড়ি, মশারি জ্যাপার এবং বৈদ্যুতিক বাইক তৈরির জন্য পরিচিত। সেতু রক্ষণাবেক্ষণের কাজে তাদের খুব একটা দেখা যায়নি। এরপর প্রায় ৭ মাস ধরে মেরামতের পর নববর্ষ সামনে রেখে খুলে দেওয়া হয় সেতুটি। এর আগেও বেশ কয়েকবার মেরামত করা হয়েছিল সেতুটি। প্রতিস্থাপন করা হয়েছে সেতুর অনেক মূল অংশও।
সেতু ধসের ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২ লাখ এবং আহতদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এছাড়া রাজ্য সরকারও নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে চার লাখ এবং আহতদের পরিবারকে ৫০ হাজার রুপি করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।